শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৯ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতে হঠাৎ করেই আবারও চোখ রাঙাচ্ছে করোনাভাইরাস নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘জেএন.১’ । দেশটির গোয়া,কেরালাসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে অন্তত ২১ জনের শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। এ অবস্থায় নতুন ভ্যারিয়েন্ট ঠেকাতে সবাইকে আগে থেকেই সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা করোনাভাইরাসের নতুন এই ধরন নিয়ে শঙ্কিত যা আগের সব ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রামক হয়ে উঠতে পারে। কোভিড-১৯ এর নতুন এই ধরন জেএন.১ সম্প্রতি ভারত ছাড়াও চীনসহ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হয়েছে। খবর দ্য হিন্দুস্তান টাইমস।
এ অবস্থায় নতুন ভাইরাসটিকে এড়ানোর জন্য কিছু পরামর্শও দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। জনসাধারণের ভিড় এবং আবদ্ধ স্থানগুলোতে মুখে মাস্ক পরিধান করা ছাড়াও হাঁচি-কাশি ঢেকে রাখা, প্রতিদিন হাত পরিষ্কার করা, যথাযথভাবে টিকাগুলো নেয়া, অসুস্থ হলে বাড়িতে থাকা এবং সন্দেহ হলে পরীক্ষা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
গত ৮ ডিসেম্বর রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলে তিরুবনন্তপুরম জেলার কারাকুলাম থেকে একজন আরটি-পিসিআর পজিটিভ আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়। ৭৯ বছর বয়সী নারী ইনফ্লুয়েঞ্জা লাইক ইলনেসের (আইএলআই) হালকা লক্ষণ ছিল এবং কোভিড থেকে সেরে উঠেছেন। এই ধরনটি আবারও বিশ্বব্যাপী সংক্রমণের শঙ্কা ছড়িয়ে দিয়েছে।
গত ১৫ ডিসেম্বর কোভিড-১৯-এর নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয় চীনে, যার নাম জেএন-১। ইতোমধ্যে দেশটির অন্তত সাত জন রোগীর শরীরে ভাইরাসের নতুন এই ধরনটি শনাক্ত হয়েছে। এতে করে ফের ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। কোভিড-১৯-এর ভয়াবহ ধরন ওমিক্রনের নতুন এই উপধরনের মাঝে বিশ্বব্যাপী দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এ অবস্থায় ওই ভাইরাসটিকে ‘আগ্রহের ধরন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
এর আগে করোনাভাইরাসের নতুন একটি উপধরন বিএ-২.৮৬ শনাক্ত হয়েছিল যাকে জেএন.১ বলে ধারণা করা হতো। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে এই ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ সেন্টারের (সিডিসি) বরাতে জানানো হয়েছে, জেএন.১ এবং বিএ.২.৮৬-এর মধ্যে খুবই সামান্য পার্থক্য রয়েছে।
চলতি ডিসেম্বরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে যে ক’জন কোভিড রোগী এই মুহূর্তে আছেন, তাদের ১৫-২৯ শতাংশের শরীরে রয়েছে জেএন.১ উপধরনটি।
এই ধরনটির পৃষ্ঠে মধ্যে থাকা স্পাইক প্রোটিন যা দেখতে ‘স্পাইক’ সদৃশ্য, এটি ভাইরাসটিকে মানুষে সংক্রামিত করে থাকে। সিডিসির তথ্য অনুযায়ী, ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনকে ধ্বংস ও অকার্যকর করতে পারে এমন ক্ষমতাসম্পন্ন টিকা ইতোমধ্যে দেয়া শুরু হয়েছে।
জ্বর, সর্দি, গলা ব্যথা, মাথাব্যথা এবং কিছু পরিস্থিতিতে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল (পাতলা পায়খানাসহ বমি) সমস্যা রোগীদের মধ্যে উপসর্গ হিসেবে দেখা যেতে পারে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ রোগী হালকা শ্বাসযন্ত্রের উপসর্গগুলো অনুভব করেন, যা সাধারণত চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে সেরে যায়।
এর আগে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম সার্স-কোভি-২ বা করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। তারপর থেকে ২০২১ সালের শেষ পর্যন্ত করোনার তাণ্ডবে বিশ্বব্যাপী মারা গেছেন প্রায় ৭০ লাখ মানুষ। সরকারি হিসাবমতে, বাংলাদেশে আগস্ট পর্যন্ত কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৯ হাজার ৪৭৬ জন।
Leave a Reply